আমি তাহলে যাবো
নীলাক্ষী জল যেখানে লালন করে ধীবরের প্রাণ, চাঁদের কলা হিসেব করে বীজ বুনে চাষীরা এখানে।
প্রেমের নদী উজান বহে বেহুলার ভেলায় সযত্নে রাখা শনকার ধান পূণর্জন্মের প্রতীক্ষায়।
জল নদী হাওর বুকে নিয়ে লালন করে তীরের জীবন, গাঙেয় পাললিক মাটির বদ্বীপ, সবুজাভ ক্ষেত হরিদ্রাভ হয় সোনার নোলক পরে। অঘ্রানের ঝলমল শিশির বিন্দু কৃষানীর উজ্জ্বল মৃগাক্ষি, ফসলি মাঠে মহিনের ঘৌড়ার মত উদাম
চরে বেড়ায়। জীবনানন্দের সন্ধানী মন বনলতা সেনের চুলের আর পাখির নীড়ের মত একজোড়া চোখ।
পদ্মা মেঘনা যমুনার বিস্তীর্ণ জলসীমা লালন করে বারো ভুইঞার দুর্দান্ত নৌবহর, সহস্র দাঁড়ের ভয়ংকর শব্দ চাঁদ সওদাগরের দুর্মর প্রতিজ্ঞায় ভাসে সপ্তডিঙ্গা
মধুকর, কালিদহের কালো জলে। ঈশাখাঁর তরবারি দুরন্ত দুর্বার দুর্দমনীয় 'বুলগাক পুরের'সীমানায়।
সময় এবং নদীর স্রোত লালন করে সিংহের দম্ভে, কাঞ্চন চর্চীতা হিরন্য গর্ভিনী বাংলায়। চাঁদ সওদাগরের দীপ্ত ঘোষণা-এ কানির পুজো দেবনা আমি।
ক্ষুদিরাম-প্রীতিলতা, সূর্যের চিতায়, আবারো
শোনা যায়-বজ্রনিনাদ-
রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব' কারন-
আমরা কোন মানবের দাস হতে রাজি নই আমরা কোন দানবের গ্রাস হতে রাজি নই।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ চিরদিন স্বদেশ থেকে সংকলিত (ফেব্রুয়ারী-২০০৮)
নারী তুমি
নারী তুমি আধ্যাশক্তি, ঋষি মণুর হৃদে,
ধীবর কন্যা গান্ধারীর প্রতি প্রচন্ড আশক্তি পরাশর মুনির,ব্যসদেব-কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের জন্ম তাই,
কিংবা কৈলাশ চূড়ায় মহাধ্যানী,শিব-শংকরের অমরায় ধ্যান ভাঙতে পটিয়সী মেণকার নৃত্যাভঙ্গি দেবাদিদেব,মহাদেবকে তাই পরাভূত
করেছিল,অতনূর কামবাণে।
তেমনি আমাকেও তুমি রম্ভার মতো করেছিলে
উদ্ভ্রান্ত অজ্ঞান।
আমি তাই তোমার শরীরের উপকূলে উপত্যকায়
চরে বেড়িয়েছি যথেচ্ছায়।
তারপরও গভীর সমুদ্র স্বপ্নে মগন।
আমার যৌবন নিয়ে ফিরে এলাম স্বদেশের ডাকে, মিশে গেলাম জন থেকে জনতায়,
তাই হয়তো আর খুঁজে পাওনি আমাকে, নারী তুমি ক্ষমা করে দিও আমায়।
রচনাকাল: ১৯৭৪
Chife Editor: Md. Sadiqur Rahman Rumen
© All rights reserved