1. info@www.kalomerkarukaj.com : কলমের কারুকাজ :
  2. sadikurrahmanrumen55@gmail.com : Sadiqur Rahman Rumen : Sadiqur Rahman Rumen
রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

এম.সি কলেজ ছাত্রাবাস ও কিছু স্মৃতি🌱অধ্যাপক মোঃ আহবাব খান

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪
  • ১৩৬ বার পড়া হয়েছে

অধ্যাপক মোঃ আহবাব খান

🌱এম.সি কলেজ ছাত্রাবাস ও কিছু স্মৃতি🌱

 

এম.সি কলেজ ছাত্রাবাস-এর একজন প্রাক্তন আবাসিক ছাত্র হিসাবে আমি সব সময় নিজেকে নিয়ে গর্ব করি। আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন থেকে মনের মধ্যে সুপ্ত বাসনা ছিল এম.সি কলেজে পড়বো ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাসে থাকবো। এর পেছনে একটি কারণ ছিল তা হলো দিরাই থানাধীন কুলঞ্জ গ্রামের আমার এক তালতো ভাই জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী’৭০ সালে দিনাজপুর কলেজে প্রিন্সিপাল ছিলেন। এক সময় তিনি এম.সি কলেজের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও ঐতিহ্যবাহী এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসের ৩য় ব্লকের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। ওই প্রিন্সিপাল ভাই সাহেব আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি (১৯৭০ সালে) তখন আমাদের বাড়িতে আসেন। তিনি দিনাজপুর কলেজের দায়িত্বে আছেন বলে জানান এবং আলাপচারিতায় সিলেট এম.সি কলেজ ও তার ছাত্রাবাসের কথা তুলে ধরে বলেন, চাকুরী জীবনে অনেক সরকারী কলেজে অধ্যাপনা ও ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেছি কিন্তু এম.সি. কলেজের ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য ও ছাত্রাবাসের পরিবেশ কম সংখ্যক কলেজ ও ছাত্রাবাসে পেয়েছি। তালতো ভাই জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলামের কথাগুলো আমার মনের মনিকোঠায় বিদ্ধ করে, পড়াশুনা চালিয়ে গেলাম এবং ১৯৭২ সনে এস.এস.সি পাস করলাম। এবার মনের সুপ্ত বাসনা রূপায়নের সুযোগ এম.সি কলেজে ভর্তি হওয়া ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাসে থাকা। কিন্তু একটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যথাসময়ে এম.সি. কলেজ সহ নামীদামি কলেজে ভর্তি হইনি। প্রায় দুই মাস পর ভর্তি হই তাজপুর কলেজে। ভর্তি হওয়ার ২৮ দিনের মাথায় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। আমি ছাত্রলীগ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে আগ্রহ প্রকাশ করি কিন্তু ছাত্রলীগ থেকে নমিনেশন না দেওয়ায় আমি অভিমান করে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে নমিনেশন নেই। সিদ্দিক-খালেদ প্যানেল ছাত্রলীগের অপর দিকে আলীনুর-আহবাব প্যানেল ছাত্র ইউনিয়নের। নির্বাচনে সিদ্দিক খালেদ প্যানেল বিজয়ী হয়। সহ সভাপতি পদে আলীনূর ১১ ভোটে ও সাধারণ সম্পাদক পদে আমি মোঃ আহবাব খান ৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হই। নির্বাচনের ২০ দিনের মধ্যেই আমি তাজপুর মহাবিদ্যালয় থেকে বদলি সনদপত্র নিয়ে সরকারী মুরারীচাঁদ উচ্চ মাধ্যমিক মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হই এবং হোস্টেলের ১১৯নং রুমে সীট পাই। যথারীতি সরকারী মুরারীচাঁদ উচ্চ মাধ্যমিক মহাবিদ্যালয় থেকে এইচ.এস.সি পরীক্ষা দেই এবং ১৯৭৪ সনে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হই। এইবার প্রিন্সিপাল ভাই সাহেবের ঐতিহ্যবাহী এম.সি কলেজে পড়া ও ছাত্রাবাসে থাকা। এম.সি. কলেজে ১৯৭৫ সনে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হই এবং ছাত্রাবাসে সীটের জন্য ৫ম ব্লকে গিয়ে তত্বাবধায়ক জনাব মোঃ আব্দুল গনি স্যারের কাছ থেকে ফরম নিয়ে পূরণ করে জমা দেই। স্যার বললেন ২/৩ দিন পর খবর নেওয়ার জন্য। আমি তত্ত্বাবধায়ক স্যারের অফিস থেকে বের হয়ে ছাত্রাধিনায়কের ৫০১ নম্বরের রুমে যাই এবং বলি আমি হোস্টেলেসীটের জন্য আবেদন করেছি আমাকে এ ব্যাপারে একটু সহযোগিতা করবেন।

 

 

 

 

 

 

(পিতা: মরহুম আছদ্দর খাঁন ও একমাত্র পুত্রের সাথে অধ্যাপক মোঃ আহবাব খান)

(আপন তিন ভাইয়ের সাথে অধ্যাপক মোঃ আহবাব খান)

ছাত্রাধিনায়ক নওয়াব মজুমদার ভাই বললেন এম.সি. কলেজ ছাত্রাবাসে কোন তদবির চলে না, যোগ্যতা অনুযায়ী সীট বরাদ্দ করা হয়। ছাত্রাধিনায়কের প্রথম ধাক্কায় বুঝলাম এই ছাত্রাবাসে সীট পেতে হলে একাডেমিক যোগ্যতা, নম্র, ভদ্র ও অমায়িক ব্যবহার থাকতে হবে। ২ দিন পর আবার এম.সি. কলেজ ৫ম ব্লকের ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখলাম অফিসের সামনে টাঙ্গানো নোটিশ বোর্ডে নতুন বোর্ডারের নাম, আমার স্থান শীর্ষে থাকায় খুশী। ওই দিনই বাড়িতে এসে ছাত্রাবাসে সীট পেয়েছি জানালাম, আমার ‘মা’ সহ সকলে খুশী হলেন। তিন দিনের মধ্যে ছাত্রাবাসে ‘ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ’ নিয়ে আসলাম, ছাত্রাধিনায়ক নওয়াব মজুমদার ভাই আমাকে ৫০৯ নম্বর রুমে নিয়ে গিয়ে খালি একটি সীট দেখিয়ে বললেন এই সীটটি তোমার এবং বললেন রুমের ভেতর যে দুজন তারা তোমার রুম-মেইট, দু’জনই দ্বাদশ বিজ্ঞানের ছাত্র, আমি দু’জনের একজনকে চিনি, সে হচ্ছে আমার মুরারীচাঁদ উচ্চ মাধ্যমিক মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের রুম-মেইট ছয়েফ এর ছোট ভাই হেলাল, অন্যজনের সাতে করমর্দন করার সাথে সাথে আমি আমার নাম মোঃ আহবাব খান বললাম, সে সাথে সাথে তার নাম ‘ইউসুফ’ বললো আরো বললো ‘আহবাব ভাই’ আমি আপনাকে চিনি আপনি মুরারীচাঁদ উচ্চ মাধ্যমিক মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা ও আমাদের আশার কান্দি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খান বাড়ির সন্তান। আমি ইউসুফের কথায় হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম তুমি আমার সম্পর্কে এতটুকু জানো কিভাবে, সে বললো আমার বাড়ীও জগন্নাথপুর উপজেলাধীন আশারকান্দি ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে, আমি তৃতীয় শ্রেণী থেকে সিলেটে ছাত্রাবাসে থেকে পড়তেছি, আমার আব্বা ‘মানিক মিয়া চেয়ারম্যান’। শুনেই বললাম চেয়ারম্যানের সাথে আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ট সম্পর্ক। চেয়ারম্যান সাহেবের মুখ থেকে অনেকবার তোমার কথা শুনেছি, আজ তোমাকে দেখে খুবই ভালো লাগতেছে, এর উপরে তোমাকে রুম-মেইট হিসাবে পেয়েছি। ইউসুফ ও হেলালের সাথে আলাপ করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো, এরই মধ্যে ইউসুফ কেন্টিন থেকে চা ও বিস্কুট নিয়ে আসলো, চায়ের পর্ব শেষ করলাম, মাগরিবের আযান হলো আমরা নামাজ আদায় করে যার যার চেয়ার ও টেবিলে বসলাম পড়ার জন্য। নতুন ভর্তি হয়েছি এখনো বই কিনিনি, তাই চেয়ার থেকে উঠে বারান্দায় যাই, পুরো ছাত্রাবাসে পিনপতন নীরবতা, সবাই পড়াশুনায় ব্যস্ত। বরান্দার রেলিং ধরে কিছুক্ষণের জন্য আনমনা হয়ে যাই। সম্বিত ফিরে এলে মনে মনে বলি এই সেই ঐতিহ্যবাহী এম.সি কলেজ ছাত্রাবাস যেখানে থেকে পড়াশুনা করার প্রবল ইচ্ছা মনে লুকায়িত ছিল, আজ বাস্তবে রূপায়ন হল। এখন আমি এম.সি. কলেজ ছাত্রাবাস সম্পর্কে দুটো কথা বলবো, প্রধান রোড থেকে হোস্টেল রোডে ঢুকলে প্রথমে একটি কালভার্ট পাওয়া যায় তার পর ডান দিকে ১ম ব্লকের খেলার মাঠ ঐ মাঠে ভলিবল, লংটেনিস এর প্লেইস রয়েছে, এ ভলিবল মাঠে আন্তঃব্লক ভলিবল খেলা খুবই জাকজমকপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হতো। বাম দিকে শ্রীকান্ত ছাত্রাবাসের সামনে বিরাট মাঠ রয়েছে, ওই মাঠের পশ্চিম দিকে ছাত্রদের জন্য বিরাট কমনরুম (অডিটোরিয়াম), কমনরুমে ওই সময়ের পত্রিকা সাপ্তাহিক যুগভেরী, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, দৈনিক সংবাদ থাকতো, বিকালে ছাত্ররা ঐ পত্রিকা পড়তো, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হোস্টেলএর ছাত্রদের জন্য একটি টেলিভিশন দিয়ে ছাত্ররা কমনরুমে এসে টিভি দেখতো, উল্লেখ্য যে সিনিয়র ছাত্ররা সামনে বসতেন এবং জুনিয়ররা পেছনে বসে টিভি দেখতেন, এটা কোন আইন নয় এটা এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসের ছাত্রদের সৌজন্যতাবোধ, অভ্যন্তরীন সমস্ত খেলাধুলা ওই কমনরুমে অনুষ্ঠিত হতো।

(সাবেক মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান সাহেবের সাথে অধ্যাপক মোঃ আহবাব খান)

শ্রীকান্ত ছাত্রাবাসের পশ্চিম দিকে তত্ত্বাবধায়কের অফিস ও অফিসের পেছনে বাসভবন, একই ভাবে প্রথম ব্লকের ছাত্রাবাসের পূর্ব দিকে তত্ত্বাবধায়কের অফিস ও পেছনে বাসভবন। হোস্টেল রোডের সামনে গেলে ডানদিকে ২য় ব্লক, ২য় ব্লকের সামনে বিরাট খালি জায়গার পর ১ম ব্লক। ২য় ব্লক এর পূর্ব দিকে তত্তাবধায়কের অফিস ও বাসভবন। বাম দিকে তাকালে তৃতীয় ব্লক, তৃতীয় ব্লকের পশ্চিম দিকে তত্ত্বাবধায়কের অফিস ও বাসভবন। ৩য় ব্লকের সামনে মাঠ পরে শ্রীকান্ত ছাত্রাবাস, ২য় ও ৩য় ব্লক পার হয়ে প্রথমে ডান দিকে তাকালে ছোট একটি কেন্টিন, আরেকটু এগোলে ডান দিকে পুকুর, সামন্য একটু হাঁটলেই পাবেন ৫ম ব্লক, ওই ৫ম ব্লকের ৫০১নং রুমের পেছনে ৫ম ব্লকের তত্ত্বাবধায়ক স্যারের অফিস, আর ৫০১নং রুমের ঠিক পশ্চিমে একটু দুরে ৫ম ব্লকের তত্ত্বাবধায়কের বাসভবন। হোস্টেলের ৫ম ব্লকের পূর্ব অংশের সামনে পুকুর, কেন্টিন ও ২য় ব্লক, আর ৫ম ব্লকের পশ্চিম অংশে ভলিবল খেলার মাঠ ও কিছু অংশ খালি সামনে ৩য় ব্লক। ৫ম ব্লকের সামনের রোড থেকে ডান দিকে মোড় নিয়ে হাঁটলে ঠিক বামদিকে ৫ম ব্লকের পূর্বাংশ, কিছু প্যালেস, ৫ম ব্লকের ডাইনিং হল, সামান্য প্যালেস পরে ৪র্থ ব্লকের ডাইনিং হল ও ৪র্থ ব্লক ওই ৪র্থ ব্লকের ৪০১নং রুমের পিছনে তত্ত্বাবধায়ক স্যারের অফিস, এখানে উল্লেখ্য যে, ৪র্থ ব্লকের তত্ত্বাবধায়ক স্যারের কোন বাসভবন ছিল না, তত্ত্বাবধায়ক স্যার “প্রফেসর কোয়ার্টার” থেকে এসে অফিস করতেন। ২য় রকের পূর্বাংশের একটু দূরে একটি অব্যবহৃত ‘বাংলো’ টিলার উপর অবস্থিত, এই বাংলোটি হোষ্টেলের মেডিক্যাল অফিসারের বাংলো, বাংলার নিীছে মেডিকেল সেন্টার আমি ওই হোস্টেলে থাকার সময় (১৯৭৫-১৯৭৯) মেডিক্যাল সেন্টারে ডাক্তার বাহির থেকে এসে চিকিৎসা সেবা দিতেন। হোস্টেলের সীট সংখ্যা ছিল ১ম ব্লকে ৩৭ জন, ২য় ব্লকে ৩৭ জন, ৩য় ব্লকে ৩৭ জন, ৪র্থ ব্লকে ৪৮ জন, ৫ম ব্লকে ৪৮ জন ও শ্রীকান্ত ছাত্রাবাসে (যা হিন্দুু ব্লক নামে পরিচিত) ৩৭ জন, হিন্দু ব্লকের ছাত্ররা ডাবলিং করে থাকতে দেখা যেতো। ওই সময় (১৯৭৫-১৯৭৯) তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ১ম ব্লকের জনাব মোঃ শামসুর রহমান স্যার, ২য় ব্লকে জনাব মোঃ আব্দুল আজিজ স্যার, ৩য় ব্লকের জনাব মোঃ আব্দুল মতিন চৌধুরী স্যার, (উপাধ্যক্ষ), পরে জনাব মোঃ আবুল হোসেন স্যার (উপাধ্যক্ষ), ৪র্থ ব্লকের জনাব মোঃ আকবর আলী স্যার, পরে জনাব মোঃ শামসুল হুদা স্যার, ৫ম ব্লকে জনাব মোঃ আব্দুল গনি স্যার এবং শ্রীকান্ত ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক বাবু বিধু ভূষণ স্যার। এম.সি কলেজ হোস্টেলের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে স্বতন্ত্র বোধ লক্ষ্য করা যায়। (১৯৭৯ পর্যন্ত) তা হলো সকালে ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধোয়ে, চা ও বিস্কুট, সকল ৯টা থেকে ১০ ঘটিকা পর্যন্ত ভাত সাথে মাছ অথবা মোরগের তরকারী ও ডাল। দুপুর ১টা থেকে ভাত সাথে ভাজি অথবা নিরামিষ। রাতের খাবারে ভাত সাতে মাছ অথবা মোরগের তরকারী ও ডাল। এম.সি কলেজের আবাসিক ছাত্র ভাইদের কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্কের কথা, সিনিয়র ছাত্ররা জুনিয়রদের নিজের ছোট ভাইদের মত স্নেহ করতেন, আর জুনিয়র ছাত্ররা সিনিয়র ছাত্রদের নিজের বড় ভাইদের মত শ্রদ্ধা করতেন।

(সহপাঠী ও মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব শফিকুর রহমান চৌধুরীর সাথে অধ্যাপক মোঃ আহবাব খান)

আর হোস্টেলের ‘ছাত্রাধিনায়ক’ কে স্যারের মত শ্রদ্ধা করতেন। এটা কোন আইন নয় ইহা এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসের ছাত্রদের প্রথা, রীতি-নীতি, চাল-চলন, আদব- কায়দা, শিষ্টাচার, নম্রতা, ভদ্রতা। ১৯৭৫-১৯৭৯ সনে দেখেছি প্রত্যেক এইচ.এস.সি ব্যাচকে 3 ছাত্ররা বিদায় সংবর্ধনা দিতো, ওই বিদায় সংবর্ধনা অত্যন্ত জাকজমক পূর্ণভাবে দেওয়া হত, বি.এ (পাস) ও বি.এস.সি (পাস) আবাসিক ছাত্রকেও বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হতো। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যারা দীর্ঘদিন ছাত্রাবাসে থেকেছে ওই সম্মান সমাপনী পরীক্ষার্থী ছাত্ররা পরীক্ষা দিয়ে কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া বিদায় নিয়ে যায়। এখন আসি ১৯৭৬-১৯৭৭ ইংরজীর ছাত্রধিনায়ক ও তাদের দায়িত্বের কথা ওই সময়ে ছাত্রধিনায়ক ছিলেন যথাক্রমে ১ম ব্লকের মোঃ আব্দুল খালিক (বি.এস.সি), ২য় ব্লকের মোঃ আব্দুর রউফ বাদশা, (অর্থনীতি সম্মান), ৩য় ব্লকের মোঃ আব্দুস সোবহান আরিফ (বাংলা সম্মান), ৪র্থ ব্লকে মোঃ মুহিবুর রহমান (অর্থনীতি সম্মান), ৫ম ব্লকে মোঃ আহবাব খান (রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ সম্মান) ও সত্যনারায়ন পুরকায়স্থ (উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগ) শ্রীকান্ত ছাত্রাবাস, ছাত্রাধিনায়কদের মূল কাজ হলো, ছাত্র তত্ত্বাবধায়ক স্যারের সাথে সেতুবন্ধন ও তত্ত্বাবধয়াক স্যারকে প্রশাসনিক ব্যাপারে সাহায্য করা। প্রত্যেক মাসের প্রথম ৭ তারিখে ৬ ব্লকের ৬ জন তত্ত্বাবধায়ক স্যার ও প্রত্যেক ব্লকের ছাত্রাধিনায়ককে নিয়ে সন্ধ্যা ৭টায় সভা অনুষ্ঠিত হতো। ওই সভায় হোস্টেলের যাবতীয় বিষয়ে আলাপ আলোচনা হতো। বিশেষ করে ছাত্রদের পড়াশোনার ব্যাপারে আলোচনা ছাড়াও খেলাধুলাসহ অন্যান্য বিষয়ে স্যাররা তাদের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিতেন, যা ছাত্রাধিনায়কের মাধ্যমে ছাত্রাবাসের ছাত্ররা পেয়ে তা পালন করতেন। এম.সি কলেজের আবাসিক ছাত্ররা সব পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে কলেজের সুনামকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করতো। তাইতো আজো ছাত্ররা এম.সি. কলেজে পড়তে চায় এবং ছাত্রাবাসে থেকে ভালো রেজাল্ট করে জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আমি বর্তমান প্রজন্মের এম.সি কলেজ সহ সকল ছাত্রদের জীবন দ্বীপ্তায় আর পূর্ণতায় ভরে উঠুক এই কামনা করি।

 

লেখক:

অধ্যাপক মোঃ আহবাব খান

 

 

শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী ও একজন রাজনীতিবিদ প্রাক্তন আবাসিক ছাত্র এম.সি কলেজ ছাত্রবাস।

 মোবাইল নং- ০১৭১১-২৩৩৩০৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: বাংলাদেশ হোস্টিং