করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও আঙুলের মিহিন সেলাই!
কবি:—–মহাদেব সাহা।
মোবাইল টেলিফোন ও যাবতীয় মেসেঞ্জার সহজলভ্য হবার আগে চিঠির আবেদন ছিল সার্বজনীন, চিঠির অপেক্ষা ছিল মধুর, বিরহ বেদনাবিধুর।
তাই চিঠি নিয়ে কত কবিতা গান, ভালো আছি ভালো থেকো/ আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো/–কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, তারও বহু বহু আগে কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন পত্রোপন্যাস বাঁধনহারা।
এখন আর চিঠি লিখার বালাই নেই, মুঠোফোন চাপলেই সাত সমুদ্দুর তের নদী পার মুহূর্তেই, তাই চিঠি নিয়ে কাব্য মহাকাব্য রচনা ও গেছে প্রায় থেমে, শুন্যের কোঠায় নেমে।
অবশ্য এ যুগে সরকারি অফিস দপ্তরে, দরকারি মুদ্রিত চিঠি আদান-প্রদান হয়ে থাকে, প্রেমপত্র বা পারিবারিক চিঠি লেখা উঠেছে,পত্রকাব্য লেখালেখিও ঘুটেছে।
এই হারানো ঐতিহ্যের খুজেই চলতি নিবেদন, কবি: হাজেরা কোরেশী অপির পত্রকাব্য: (প্রিয়তম সোয়ামির প্রতি মর্জিনা)
—————সম্পাদক।
প্রিয়তম সোয়ামির প্রতি মর্জিনা
প্রিয়তম মোর শ্রদ্ধাভাজনেষু, কেমনে আছেন আপনি?
আপনার তরে জানাই যে সালাম, আমি এই অভাগিনী।
করিয়া গ্রহণ মোর দুনো পাণি, সেই যে গেলেন চলিয়া
যাইবার কালে গিয়াছিলেন কহিয়া, আসিবেন আবার ফিরিয়া।
দিবা চলিয়া যায়, মাস কাটিয়া যায়, ফুরাইয়া যায় বছরখানি।
আমি বিরহীনি পথো পানে চাহিয়া, পড়ে মনে আপনার বাণী।
কেমনে আছেন ভুলিয়া দুঃখীনিরে, সেই যে সুদূর পরবাসে?
সাধেরো যৌবন শুকাইয়া যে গেলো, নিঠুর একলা কারাবাসে।
দিবা তবু কাটে যেমনি তেমনি, নিশিতে করে রাক্ষুসী ভয়।
পাছে না মোরে একলা পাইয়া, শিয়াল কুকুরে টানিয়া লয়।
আমি যে সুন্দরী, অবলা নারী ভরা যৌবনে পড়িয়া সাঁতরাই।
কেমনে বাঁচাবো নিজেরি ইজ্জত, ভাবিয়া না কোনো দিশা পাই।
আপনি ছাড়া কেবা আছে মোর, বুঝিবে পরানের ব্যাথা?
হৃদো মাঝে রাখিনু করিয়া জমা, শত শত প্রেমেরি সুখ গাঁথা।
নয়নের জলে ভাসিয়া যায় বক্ষ, কেহো নাহি দেখিবারে পারে।
সাক্ষী যে কেবলি চারিদেয়ালগুলো, আর মানি সাক্ষী উপরওয়ালারে। ওগো প্রিয়তম পরানেরও সখা, দিবেন কি দেখা এই দাসীরে?
আপনার তরে সঁপিয়াছি জীবন, ফিরাইয়া দেন বদনের হাসিরে।
দোহাই প্রিয়তম করিয়া মিনতি, কহি আমি আপনার তরে।
আসেন গো ফিরিয়া সবকিছু ছাড়িয়া, প্রেয়সী মর্জিনার ঘরে।
নাহি থাকিলো আপনার তরে, মোর যে আর কিছু কহিবার।
পরানের কথা কহিয়াছি খুলিয়া, নাহি যে তাকত আর সহিবার।প্র
কাশিত কাব্যগ্রন্থ: মনের সতকাহন থেকে সংকলিত।
উৎসর্গ: অনুজ কবি: মোঃ সাদিকুর রহমান রুমেন কে।