১২ জুলাই ২০২৪ শুক্রবার।
Traveler Of Greater Sylhet
এর সঙ্গে আমরা একদল ভ্রমণপ্রেমী গিয়েছিলাম ভারতের মেঘালয় রাজ্য ভ্রমনে।
ভ্রমন নির্দেশক হিসেবে আমাদের সাথে ছিলেন: অত্যন্ত সুভদ্র, অমায়িক অভিজ্ঞ ও চৌকস পর্যটক Traveler Of Greater Sylhet এর মোঃ আতিক চৌধুরী আতিক ভাই।
এছাড়া পুর্ণাঙ্গ ভ্রমণ দলের পর্যটকগণের নামের তালিকা যথাক্রমে:
মোঃ আতিক চৌধুরী আতিক
কবি: মোঃ সাদিকুর রহমান রুমেন
মোঃ জুয়েল আহমেদ
মোঃ নোমান আহমেদ
এম ডি রফিকুল ইসলাম
আব্দুর রহমান তারেক
মোঃ মাসুক আহমেদ
এমডি হাফিজুর রহমান
আব্দুর রশিদ
মোঃ শফিকুল ইসলাম
মোঃ রনি আহমদ
শুক্রবার ভোরে ৭:৩০ মি: এ আমরা সোবহানীঘাট পয়েন্টে জোনাকি রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা সেরে গেটলক বাসে তামাবিল স্থলবন্দরে পৌঁছাই, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ইমিগ্রেশন চেকিং সেরে, ভারতীয় সীমানায় প্রবেশ করে ভারতীয় বিএসএফ এর প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য তাঁদের কে পাসপোর্ট দেখাই, এরপর ভারতীয় কতৃপক্ষের অভ্যর্থনাকারী বাস এসে আমাদের কে নিয়ে যায় ডাউকি ল্যান্ড পোর্টে। সেখানে ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আমাদের ভিসা চেক করে প্রবেশের অনোমুদন দেওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে আসি।
এরপর আগেই ঠিক করে রাখা দুটি গাড়ী (একটি জীপ ও একটি কারে) ওঠে আমরা রওয়ানা দেই মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের উদ্দেশ্যে।
পাহাড় বেয়ে গাড়ি ডাকি নদীর ব্রীজ পেরিয়ে যাওয়ার পর আমরা ভারতীয় মুদ্রা ক্রয় করি যার যার প্রয়োজন মতো।
এরপর আবার গাড়িতে ওঠে যাত্রা করি: শুরু হয় আমাদের এডভেঞ্চার গাড়ি চলতে থাকে পাহাড়ি খাড়াই উৎরাই পেরিয়ে দ্রুতগতিতে: অত্র ভ্রমণলিপির লেখক, কবি: মোঃ সাদিকুর রহমান রুমেন এবং ভ্রমণ গাইড আতিক চৌধুরী সহ আমরা যে গাড়িতে ছিলাম সে গাড়ির ড্রাইভারের নাম নৃপেন্দ্র হাজং যার বাড়ি গাড়ো পাহাড় জেলায়, অত্যন্ত মিতভাষী কিন্তু গাড়ি চালনায় বেশ দক্ষ এবং সাহসী।
গাড়ির জানালা দিয়ে আমরা আমাদের কৌতুহলী চোখ মেলে দিলাম দুই পাশের সুউচ্চ পাহাড় শ্রেণীর দিকে।
পাহাড়গুলো এত উঁচু যা আকাশে ভাসমান মেঘের সমতায় পৌঁছে গেছে।
যেন মেঘ আর পাহাড় এঁকে অন্যকে চুমু দিচ্ছে ভালোবেসে।
পাহাড়ে বেয়ে পরা পাহাড়ী ঝর্ণার স্বচ্ছ পানিকে দূর থেকে মনে হয় দুধের মত।
যেন প্রকৃতির স্তন থেকে অনর্গল দুধ ঝরে পড়ছে।
সফরে আমরা যা যা দেখলাম:
👉 বড়হীল ফলস
👉 উমক্রেম ফলস
👉ঝুলন্ত ব্রীজ
👉 মাউলিলং ভিলেজ
👉লিভিং রুট ব্রীজ
প্রথম দিন শিলংয়ের লাভানে হোটেল রেডপাইনে রাত্রিযাপন
👉সেভেন সিস্টার্স ফলস
👉 নোহখালিখাই ফলস
👉মকডক ভিঊ পয়েন্ট
👉ওয়াকাবা ফলস
👉 মৌসুমাই কেইভ
👉 রোড সাইড ভিউ পয়েন্ট
দ্বিতীয় দিন শিলংয়ে একই হোটেলে রাত্রিযাপন।
তৃতীয় দিন বাংলাদেশে ফেরার পথে দেখলাম।
👉 ক্রাংসুরি ওয়াটার ফল।
এছাড়া অন্যান্য আরো নাম না জানা অনেক দর্শনীয় দৃশ্য।
বর্ণিত পর্যটন স্থানগুলো এতই অবর্ণনীয় ভয়ংকর সুন্দর যা কেউ না দেখলে অনুমান করতে পারবেন না।
ভয়ংকর সুন্দর বলছি এ কারণে যে এসব ভ্রমণতীর্থ দেখতে মানুষ এর আকর্ষণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন। কিন্তু বেশি উচ্ছাসে কেউ যদি একটু অসতর্ক হন, তবে পা পিছলে প্রায় পাঁচহাজার ফুট উঁচু থেকে পড়ে পাহাড়ী খাদ বাঁ ঝর্ণার জলে ভেসে গিয়ে প্রাণ হারাতে পারেন।
উল্লেখ্য ভ্রমণ স্পট এবং সমগ্র মেঘালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিবরণ লিখতে গেলে সুদীর্ঘ সময় এবং পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
বর্ণিত প্রত্যেকটি ভ্রমণস্পটের স্থানীয় জনশ্রুতি ও এবং ঐতিহাসিকভাবে স্পটে লিপিবদ্ধ আলাদা আলাদা তাৎপর্যময় ইতিহাস রয়েছে, যা লিখতে গেলে পুরোপুরি একটি বই লেখা দরকার।
বিশেষ করে গাছের শেকড়ের তৈরি কিছু প্রাকৃতিক এবং কিছুটা মানুষের যুগ যুগের চেষ্টায় আশ্চর্য রকমের প্রায় দুই শতাধিক সেতু রয়েছে যার নাম লিভিং রুট ব্রীজ যেটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত, এর মধ্যে এই রকম একটি সেতু আমরা এই সফরে দেখে এসেছি। সেতুগুলো দিয়ে অনায়াসে স্থানীয় মানুষ ও পর্যটক চলাচল করেছেন আর তাঁর নিচ দিয়ে বিপুল বেগে বয়ে চলেছে, পাহাড়ি ঝর্ণা ও নদীর পানি।
সবশেষে বলবো আমাদের ভ্রমণটি একে অপরের প্রতি ভ্রাতৃসুলভ আচরণ ও আমাদের ভ্রমন নির্দেশক আতিক ভাইয়ের আন্তরিক নির্দেশনা ও চেষ্টায় অত্যন্ত আনন্দ মুখর হয়ে ওঠে ছিল।
নিশ্চয়ই এই ভ্রমণ স্মৃতি সকলের মনে গেঁথে থাকবে।
কোয়াই যায়তায় ও ভাইসাব
যাইমু মেঘালয়,
যাইওনা যাইওনা ভাইসাব
মনে থাকলে ভয়।
উঁচা উঁচা পাহাড় দেখাবায়
যদি লাগে ডর
শক্ত করিয়া দাড়াইও
পায়ে দিয়া ভর।
সুন্দর সুন্দর ঝর্ণা আছে
দেখলে চোখ জুরাইব।
খান্দাত গিয়া ঝর্ণার পানি
ছুইতে মনে চাইব।
পাহাড়ের সাথে মেঘে খেলে
লুকালুকি খেলা
টের পাইতায়না দেইখ্যা ভাইসাব
খেমনে যাইবো বেলা।